বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদীয় দলের প্রধান হারুনুর রশীদ বলেছেন, সরকার জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেন লবিস্ট নিয়োগ করেছে, সেটা আমরা জানতে চাই, সরকারকে এর জবাব দিতে হবে।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে শাহবাদ থানা কৃষকদল আয়োজিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, যুগ্ম মহাসচিব মোশারফ হোসেনের রোগমুক্তি কামনায় এই দোয়ার আয়োজন করা হয়।
জাতীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, গতকাল পত্রিকায় দেখলাম, ১২টি মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘের পিস কিপিং মিশনে র্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। সামনে কিন্তু একটা মেসেজ এসে গেছে। ইতোমধ্যে দেখেছেন সংসদে আমাদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কেঁচো খুঁজতে গিয়ে সাপ বের করে ফেলেছেন। বিএনপি নাকি লবিস্ট নিয়োগ করেছে। বিএনপির লবিস্টের দরকার নেই। বিএনপি যা সত্য দেশে যা সংগঠিত হচ্ছে, সেটার জন্যই লড়াই করছি।
হারুনুর রশীদ বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৪ সাল থেকে সরকারি টাকায় অব্যাহতভাবে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। আমরা সরকারের কাছে জানতে চাই, এই লবিস্টের টাকা, জনগণের ট্যাক্সের টাকা, কী কারণে, কোন মাধ্যমে, জনগণের কোনো অনুমোদন নাই, কেন টাকা বিনিয়োগ করেছে? ২০১৪ সালে তারা বিনাভোটে এসেছে। ২০১৮ সালে আমি এমপি, আমার বলতে লজ্জা লাগে, রাতের বেলা ভোটের বাক্স ভরা হয়েছিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময় মিথ্যাচার করছেন। সংসদে, সংসদের বাইরে তিনি প্রতিনিয়ত বলেন, আমি জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আছি। আমি আপনাদের সঙ্গে যে ওয়াদা করেছি তা পালন করছি। তিনি প্রতিনিয়ত এসব মিথ্যা বলে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমরা একটা গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছি। বিশেষ করে করোনা মহামারির কারণে আমরা সংকটে জর্জড়িত। আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি দোয়ার আয়োজন করার জন্য। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, মহাসচিবসহ অসংখ্য নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আমি তাদের সুস্থতা কামনা করছি।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি আপনাদের বিশেষ করে যারা ঢাকা মহানগরীতে আছেন তাদেরকে বলব, এই মানববন্ধন পথসভা করে আওয়ামী লীগের পতন ঘটাতে পারবেন না। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জেলা পর্যায়ের তিনটি সমাবেশে আমি গিয়েছি, সেখানে কিন্তু জনগণের ঢল নেমেছে। অনেক জায়গায় ১৪৪ ধারা ভেঙে সমাবেশ করেছি। ঢাকা মহানগরীতে আমাদের সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার খুবই দুর্বল অবস্থায় আছে, সেটা লক্ষ্য করেছেন। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গত ১২ বছর ধরে বাংলাদেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা যে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে, সেটার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এখানেই থেমে নয়, অবিলম্বে দেখবেন জাতিসংঘ থেকেও নিষেধাজ্ঞা আসবে।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের জন্য আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। ঢাকা মহানগরীতে আগে রাজপথ দখলের পরিকল্পনা করতে হবে। এছাড়া সরকারকে বিদায় করতে পারবেন না। আজকে সরকারের ওপর যে চাপ আসছে। এই চাপ বুঝতে হবে। ২০২৩ সালের নির্বাচন অবশ্যই অংশগ্রহণমূলক করতে হবে। না হলে সরকার মাফ পাবে না।
শাহবাগ থানা কৃষক দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মনির হোসেন বেপারীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কৃষক দলের সহসভাপতি নাসির হায়দার, খলিলুর রহমান, স্বাধীনতা ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুকুল ইসলাম প্রমুখ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।